মূলভাব: সত্যিকারের বন্ধুর কাজ হলো মানুষের ভুলগুলো তুলে ধরা। কিন্তু নীরব বন্ধু এ থেকে বিরত থাকে এবং স্পষ্টবাদী শত্রু ভুলগুলো তুলে ধরে প্রকৃত বন্ধুর মতো কাজ করে।
সম্প্রসারিত ভাব: প্রতিটি মানুষেরই শত্রু এবং বন্ধু উভয়ই থাকে। শত্রুরা মানুষের মন্দ সাধনায় লিপ্ত হয়, যখন মিত্ররা জ্ঞান, পরামর্শ এবং শক্তি দিয়ে সাহায্য করে। ঋষিরা বলেন, বন্ধু হলো ছায়াদানকারী গাছের মতো, যার ওপর মানুষ অনেকাংশে নির্ভর করে। এই ক্ষেত্রে, একজন মিত্রের কাজ কেবল আশ্রয় দেওয়া বা সহায়তা দেওয়া নয়, ভুল বোঝানোও। আসলে মানুষের ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক। শুধু মানুষই ভুল করে। মানুষের ভুল ধরা পড়লে তা সংশোধনের সুযোগ পায়। অন্যদিকে ভুল প্রমাণিত না হলে সে বারবার ভুল করতেই থাকে। তাই যারা প্রকৃত বন্ধু তারা ভুল দেখায়। কিন্তু অনেক বন্ধু আছে যারা তাদের ভুলগুলো না দেখিয়ে চুপ থাকে।
তাছাড়া জীবন চলার পথে মানুষকে অনেক কিছুই করতে হয়। আর যখন কাজের কথা আসে তখন সব মানুষের পক্ষে সব কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। অনিচ্ছাকৃতভাবে অনেক ভুল হয়ে যায়। এই ক্ষেত্রে, একজন সত্যিকারের বন্ধুর কাজ হ'ল ভুলগুলি চিহ্নিত করা। কিন্তু নীরব বন্ধুরা তাই করে নীরব থাকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার কাজের ভালো-মন্দ জানতে পারেন না। ফলস্বরূপ, সংশোধন করা যেতে পারে। কিন্তু একজন স্পষ্টবাদী শত্রু কখনই নীরব বন্ধুর মতো নীরব থাকে না। বরং শত্রুতার জন্য হলেও ভুলগুলো প্রকাশ করে। এটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তার কর্ম সংশোধন করার সুযোগ দেয়। তদুপরি, স্পষ্ট শত্রুর কথা মাথায় রেখে, প্রত্যেকে তাদের কাজ যথাসম্ভব ত্রুটিহীনভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করে। এতে কাজের মানও বাড়ে। আর তাই দার্শনিকরা নীরব বন্ধুর চেয়ে স্পষ্টবাদী শত্রুকে উচ্চ স্থানে স্থাপন করেছেন।
মন্তব্য: শত্রু শত্রুতার ভয়ে মানুষ সদা সচেতন। এতে ভালো-মন্দ কিছু নেই। কিন্তু বন্ধু যদি বন্ধুর গঠনমূলক সমালোচনা থেকে বিরত থাকে, তাহলে সীমাহীন ক্ষতি হয়।